স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচন কমিশন যাই হোক, আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকলে কোন নির্বাচনই তারা সুষ্ঠু করতে পারবে না। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে এ দেশে কখনোই সুষ্ট নির্বাচন হতে পারে না। ডা. জাফরউল্লাহ নির্বাচন কমিশন নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন, এটি তাঁর ব্যক্তিগত মত। আমি তাঁকে (জাফরউল্লাহ) অনেক সম্মান করি। তিনি অত্যন্ত ভাল মানুষ। তবে বিএনপিকে নির্বাচন কমিশন মেনে নেওয়ার কথা বলার মত তিনি কেউ নন। ডা. জাফরউল্লা বিএনপির কেউ নন বলে মন্তব্য করেন তিনি। বিদ্যুৎ, গ্যাস, চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের লাগামহীন উর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এবং টিসিবি’র মাধ্যমে স্বল্প মূল্যে সর্বত্র পণ্য সরবরাহের দাবীতে সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নগরীর নতুন বাজার দলীয় কার্যালয় প্রাঙ্গনে মহানগর বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন।
ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক এ কে এম শফিকুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে সমাবেশে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার তিন থেকে চার দফা তেল ও গ্যাসসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়েছে। ঢাকাসহ সারাদেশে চার দফা বিদ্যুতের দাম বেড়েছে। দাম বাড়ার কারণ হচ্ছে সরকারের কর্মকর্তারা দুর্নীতিগ্রস্থ। আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল আরো বলেন, আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকার জন্য নির্বাচন কমিশনকে হাতিয়ার বানিয়েছে। আওয়ামী লীগ একটি প্রতারক দল। ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে তাঁরা ঘরে ঘরে ভোট চেয়েছে। মানুষকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু নির্বাচনে জয়ের পর তাঁরা মানুষকে লাথি দিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ যতবার মতায় এসেছে, ততবারই তাঁরা মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। বর্তমান সরকার বিএনপির নেতা-কর্মীদের দমিয়ে রাখতে সারা দেশে কমপে ৩৫ হাজার বিএনপির নেতা-কর্মীর নামে মামলা করেছে। মামলা ও পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে বিএনপির ও অঙ্গ সংগঠনের অনেক কর্মী আজ নিজের এলাকা ছেড়ে ঢাকায় গিয়ে রিকশা চালিয়ে, ভ্যান চালিয়ে এমনকি নৈশ্য প্রহরীর কাজ করে জীবন চালাচ্ছেন। অবিলম্বে বিএনপির নেতা-কর্মীদের নামে এসব মিথ্যা মামলা প্রত্যহার করতে হবে।
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়া এদেশের গণতন্ত্রের মা। তাঁর নামে মিথ্যা দুর্নীতি মামলা দিয়ে সরকার প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে। দ্রুত খালেদা জিয়ার নামে মিথ্যা মামলা প্রতাহার করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। স্বাধীনতার অঙ্গীকার ছিল, এদেশে মানুষের মধ্যে অর্থনৈতিক বৈষম্য থাকবে না। মানুষের কথা বলার অধিকার থাকবে। অথচ আজ স্বাধীনকার ৫০ বছর পর দেশের মানুষের কথা বলার অধিকার নেই। দেশে আজ ৪২ টি টেলিভিশন চ্যানেল, অনেক সংবাদপত্র। কিন্তু কেউ স্বাধীন না। সরকারের বিরুদ্ধে সত্য বলতে গেলেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দিয়ে সরকার সাংবাদিকদেরকেউ জেলে পুরে রাখছে। স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক দুর্নীতির পর একটি বেসরকারি হাসাতালের মালিককে জেলে নেওয়া হয়েছে। ওই হাসপাতালের মালিক স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে চুক্তি করলেও স্বাস্থ্যমন্ত্রী বহাল তবিয়তে আছেন।
বেলা ১১ টায় শুরু হওয়া সমাবেশে সকাল থেকেই ময়মনসিংহের বিভিন্ন উপজেলা ও মহানগরের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে নেতা-কর্মীরা আসতে থাকে। সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট ওয়ারেস আলী মামুন প্রমুখ।
ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক অধ্যাপক শেখ আমজাদ আলীর সঞাচালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক আবু ওয়াহাব আকন্দ, দণি জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক জাকির হোসেন বাবলু ও উত্তর জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার, সাবেক এমপি শাহ শহীদ সারোয়ার প্রমুখ। এসময় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।