গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) সংবাদদাতা : ভূতুরে বিদ্যুৎ বিলের কারণে দায়ের করা মামলায় জেলহাজাতে থাকা বিদ্যুৎগ্রাহক কৃষক এবিএম ঈশারুল্লাহ’র মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। শনিবার (১৯মার্চ) ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের গৌরীপুর উপজেলার রামগোপালপুর এলাকায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে ঈশারুল্লাহ’র মুক্তি ও বিদ্যুৎ বিলের গ্রাহক হয়রানি বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।
বক্তার হয়রানিমূলক ভৌতিক বিদ্যুৎ বিল বাতিল ও কৃষক এবিএম ঈশারুল্লাহর বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও মুক্তির দাবী জানান।
মানববন্ধন কর্মসূচীতে বক্তব্য রাখেন ঈশারুল্লাহর ভাই ওমর ফারুক, তার ছেলে মো. আল নাহিয়া, রামগোপালপুর বাসস্ট্যান্ড মসজিদের ইমাম মাওলানা মো. ইব্রাহিম, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মো. আলা উদ্দিন, কৃষক আবু নাঈম, মোজাাহিদুল ইসলাম, আবু সিদ্দিক, ডা. ফখর উদ্দিন, আবু রায়হান, মোহাম্মদ হোসেন, আবুল কাশেম, মো. ইউসুফ আলী, আজিজুল হক, নাজমুল ইসলাম, এনামুল হক, প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান, ব্যবসায়ী মো. সুরুজ আলী, আব্দুল গণি, গিয়াস উদ্দিন, হাবিবুল ইসলাম, তোতা মিয়া, আজিজ উদ্দিন প্রমুখ।
জানা যায়, উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের শ্রীধরপুর গ্রামের মরহুম মাওলানা আবুল বাশারের পুত্র এবিএম ঈশারুল্লাহ সেচের জন্য ঈশ^রগঞ্জ পিডিবি থেকে ২০১২সনে বিদ্যুৎ সংযোগ নেন। প্রথম বছরে তার বিদ্যুৎ বিল আসে ৯হাজার ১৭৩টাকা। এরপর আর বিদ্যুৎ ব্যবহার করেননি, বিলও দেননি। ২০১৪সালে ডিজিটাল মিটার স্থাপন ও বিল পরিশোধ করে বিদ্যুৎ সংযোগ নেয়ার জন্য পত্র দেয় বিদ্যুৎ বিভাগ। যেহেতু সেচ কার্যক্রম বন্ধ তাই তিনি আর বিদ্যুৎ বিভাগে যোগাযোগ করেনি। বিক্ষুব্দ হয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ মিটার খুলে নিয়ে যায় ও লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
ঈশারুল্লাহর স্ত্রী জানান, ঈশারুল্লাহ গত ২৫ ফেব্রুয়ারি করোনার টিকা দেয়ার জন্য গৌরীপুরে যাওয়ার পর পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে। ঈশ^রগঞ্জ আবাসিক প্রকৌশল দপ্তরের অধিনে বিদ্যুৎ হিসাব নং ৫৫৫৬/বি, গ্রাহক নং ৭৬১০৬৮৯০, বই নং কে ৫৬, ওয়াক অর্ডার ২০৮৫নং সেচ গ্রাহক ছিলো সে। তিনি জানান, তার বাড়িতে কোনো কর্মকর্তা আসেনি, কোনো অভিযান পরিচালনা করেনি, অবৈধ বিদ্যুৎও ব্যবহার করেনি অথচ স্বামীর বিরুদ্ধে ১০৮৮/১৭ নং ও ৩০৯/১৮নং ২টি মামলা করা হয়েছে। ১০৮৮নং মামলায় ২০১৮সনে গ্রেফতার হন। তখন এলাকাবাসী ও আত্মীয় স্বজন ২০১৮সনের ১৩ সেপ্টেম্বর ৪০হাজার বিদ্যুৎ অফিসে জমা দিয়ে জামিনে নিয়ে আসেন। যেহেতু আমার স্বামী বিদ্যুৎ ব্যবহার করে নাই, তাই আদালতের বিজ্ঞ বিচারক বিদ্যুৎ বিল সংক্রান্তে তদন্ত দেন। সেই তদন্ত রিপোর্ট বিদ্যুৎ বিভাগ আজও দেয়নি। তবে ওই বছরের ১৭ অক্টোবর ৩০৯/১৮নং আরেকটি মামলা দায়ের করে। এ মামলায় আমার স্বামী বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন!
আমার স্বামী জেলে, বিদ্যুৎ লাইন, মিটার ও তার সবকিছু খুলে নিয়ে গেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। তারপরও মার্চ/২১ বিল দেয়া হয়েছে ১লাখ ৮১হাজার ৯৯টাকা।
গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ খান আব্দুল হালিম সিদ্দিকী জানান, বিদ্যুৎ সংক্রান্ত মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকায় ঈশারুল্লাহকে ২৫ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এক ঘটনায় ২টি মামলার ১নং স্বাক্ষী ও তৎকালীন সময়ের ঈশ^রগঞ্জের আবাসিক প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার নিরঞ্জুন কুন্ডু বলেন, এক গ্রাহকের বিরুদ্ধে দু’টি মামলা! সেই সময় কেন হয়েছিলো, এই মুর্হুতে কিছু বলতে পারছি না।