গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) সংবাদদাতা : বিষমুক্ত শাকসবজি উৎপাদনে গৌরীপুরে মডেল কৃষক মো. শহিদুল্লাহ (৪৬)। এবার তিনি লালিমা বা লাল বাঁধাকপি চাষ করে সফল হয়েছেন। সম খরচে অধিক লাভের কারণে প্রতিবেশী কৃষকদের মাঝেও ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে লাল বাঁধা কপি চাষ। তিনি উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের তাঁতকুড়া গ্রামের আবুল হাসিমের পুত্র। তিনি কোনো ফসলেই ব্যবহার করেন না কীটনাশক। সার ব্যবহারেও তিনি সাশ্রয়ী। রয়েছে জৈব সার ও কেঁচো সার উৎপাদনের নিজস্ব প্লান্ট।
শহিদুল্লাহ জানান, রঙিন বাঁধাকপি আর সাধারণ বাঁধাকপির উৎপাদন খরচ একই। তবে রঙিন হওয়ায় এ বাঁধাকপির দাম দ্বিগুণ। বগুড়া থেকে ১১শ বীজ এনে রোপন করেছিলেন। একটাও মরেনি। ১০শতাংশ জমিতে প্রায় অর্ধলাখ টাকা লাভ হবে। তিনি আরো জানান, বাঁধাকপি ক্ষেতের ভিতরে ঝিঙ্গার বীজ রোপন করা হয়েছে। আগাম ও নতুন সবজির অধিক মূল্য থাকে।
কৃষক শহিদুল্লাহ নিয়মিতভাবে আলু, শশা, ডাটা, লাউ, ঢেড়শ, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গা, ফুলকপি, বেগুন, মরিচ, টমেটো, শিম, ক্যাপসিকাম, মিষ্টি কুমড়া, বাঁধাকপিসহ মৌসুমী শাকসবজি চাষ করেন। ব্যবহার করেন জৈব বালাইনাশক ও প্রাকৃতিক বালাইনাশক যা খাদ্যকে নিরাপদ রাখে।
উপসহকারী কৃষি অফিসার সুমন চন্দ্র সরকার জানান, মো. শহিদুল্লাহ হলেন একজন আগ্রহী কৃষক। নতুন কোনো ফসলের খবর পেলেই তিনি সেটা চাষ করেন। সেই ধারাবাহিকতায় এ উপজেলায় প্রথম লাল বাঁধা কপি চাষ করেছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার লুৎফুন্নাহার জানান, রঙিন ধরণের ধান-শাকসবজির প্রতি কৃষক শহিদুল্লাহ’র আগ্রহ অনেক বেশি। প্রথমদিকে নতুন সব্জি চাষ করে তিনি অধিক লাভবান হন। আমরা চাই সব কৃষকের মাঝে তথ্য-প্রযুক্তির নতুনত্ব পৌঁছে দিতে।
তিনি আরো জানান, ভিটামিন সি, ই, কে, ফলিক অ্যাসিড, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজসহ বিভিন্ন ধরনের ক্যারোটেনেয়ড সমৃদ্ধ সবজি হচ্ছে বাঁধাকপি। এই সবজি ক্যান্সার প্রতিরোধে কাজ করে। গবেষণায় আরো দেখা গেছে, নিয়মিত বাঁধাকপি খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে, হজমশক্তি বাড়ায়, প্রদাহ কমায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
ইউরোপিয়ান জার্নাল অব নিউট্রিশনে প্রকাশিত এক তথ্য থেকে জানা যায়, বাঁধাকপির জুস স্তন ক্যান্সারের সেল বৃদ্ধি কমায়। বয়োঃসন্ধির সময় নিয়মিত বাঁধাকপির রস খেলে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি ৭২ শতাংশ কমে যায়। এটি প্রস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধেও বেশ কার্যকরী। জাতীয় ক্যান্সার ইনস্টিটিউট জার্নালের এক গবেষণা অনুসারে, বাঁধাকপিতে থাকা আইসোথিয়োকানেটস ও ক্যারোটিনয়েডস উপাদান ফুসফুসের ক্যান্সার প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে।