রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:৪৪ পূর্বাহ্ন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নেতৃত্বের প্রতীক, পথপ্রদর্শক: রাষ্ট্রপতি

Reporter Name / ১৭১ Time View প্রিন্ট / ই-পেপার প্রিন্ট / ই-পেপার
Update : শনিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২২, ১১:৪৬ পূর্বাহ্ণ

অনলাইন  ডেস্ক:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শুধু একটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, এটি আমাদের নেতৃত্বের প্রতীক, আমাদের পথপ্রদর্শকও বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলন, মুক্তিসংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধসহ বাঙালির প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে ঢাবির রয়েছে গৌরবময় ভূমিকা। শনিবার (১৯ নভেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনে প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের ঐতিহাসিক নিদর্শন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনও ইতিহাসের অংশ। ইতিহাস ও ঐতিহ্যের নিদর্শন সঙ্গে নিয়েই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে চলেছে স্বমহিমায়।

আবদুল হামিদ বলেন, আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপন করেছি। ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে উচ্চশিক্ষার আলোকবর্তিকা হাতে নিয়ে শিক্ষার প্রসার ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা অনস্বীকার্য। দেশের এই সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ থেকেই সৃষ্টি হয়েছে জ্ঞানী-গুণী, শিল্পী-সাহিত্যিক-কবি, বৈজ্ঞানিক, রাজনৈতিক ও মানবিকগুণসম্পন্ন অসংখ্য সৃষ্টিশীল মানুষ। দেশের ভৌত ও গুণগত উন্নয়নে যাদের অবদান চিরভাস্বর হয়ে আছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নেও ঢাবির রয়েছে অপরিসীম অবদান। দেশকে নেতৃত্ব প্রদানকারী অনেক নেতাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষায় আলোকিত হয়েছেন। এ ছাড়া যুগ যুগ ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা আলোকিত মানুষ হয়ে সমাজ সংস্কারে ভূমিকা রেখেছেন এবং ভবিষ্যতেও কার্যকর অবদান রাখবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।

রাষ্ট্রপতি বলেন, একজন উপাচার্যের মূল দায়িত্ব হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রমের তত্ত্বাবধান, পরিচালন, মূল্যায়ন ও উন্নয়নকে ঘিরে। কিন্তু ইদানীং পত্রিকা খুললেই মনে হয় পরিবার-পরিজন ও অনুগতদের চাকরি দেওয়া এবং বিভিন্ন উপায়ে প্রশাসনিক ও আর্থিক সুযোগ-সুবিধা নেওয়াই যেন কিছু উপাচার্যের মূল দায়িত্ব। আবার অনেক শিক্ষকও বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিটাকে ঐচ্ছিক দায়িত্ব মনে করেন। বৈকালিক কোর্স বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেওয়াকেই তারা অগ্রাধিকার দিয়ে থাকেন। ছাত্র-শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশের সঙ্গে এটি খুবই বেমানান। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সবাই কৃতী ও সেরা ছাত্র ছিলেন। আমার বিশ্বাস আপনারা যেকোনো ক্ষেত্রে সাফল্যের সাক্ষর রাখতে সক্ষম হতেন। কিন্তু জীবনের মহান ব্রত হিসেবে শিক্ষকতাকেই আপনারা পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। তাই শিক্ষক হিসেবে নিজ পেশার প্রতি দায়িত্বশীল থাকবেন এটাই সবার প্রত্যাশা।

আবদুল হামিদ বলেন, আমরা চাই উপাচার্যের নেতৃত্বে ও ছাত্র-শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতায় প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা ও উচ্চ শিক্ষার প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হোক অর্থাৎ ‘Centre of Excellence’ হিসেবে গড়ে উঠুক। শিক্ষকরা হয়ে উঠুন সমাজে মর্যাদা ও সম্মানের প্রতীক। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষকসহ যেকোনো নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধা ও যোগ্যতাকে প্রাধান্য দিতে হবে।

তিনি বলেন, সমাবর্তন যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান। কেননা সমাবর্তনের মধ্যদিয়ে শিক্ষার্থীরা একদিকে যেমন স্বীকৃতি লাভ করে তাদের মেধা ও প্রতিভার, তেমনি সচেতন হয়ে ওঠে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে। তাদের সুনাগরিক হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে এ ধরনের অনুষ্ঠান ও আনুষ্ঠানিকতার যে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে তা সর্বজনস্বীকৃত।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Theme Created By ThemesDealer.Com