এস,আর শরিফুল ইসলাম রতন,লালমনিরহাট
লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলা কাষ্টম শুল্ক গুদাম কর্মকর্তা বিজিবির আটককৃত শুকনা সুপারি তড়িঘড়ি করে প্রবল বর্ষনের মধ্যে নিলাম দেওয়ায় সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব হারালো।
বুধবার (৩১আগষ্ট)দুপুর ০২টায় পাটগ্রাম উপজেলার কাষ্টমস শুল্ক গুদামে অপচনশীল শুকনা সুপারি তড়িঘড়ি করে প্রবল বর্ষনের মধ্যে গুদাম কর্মকর্তা নিলাম দিলেন।১৬শত ২০কেজি শুকনা সুপারি ২৫০ টাকা কেজি দরে সর্বোচ্চ দর দেখিয়ে সিন্ডিকেট সদস্য দের কাছে বিক্রি করেন।অদৃশ্য কারনে নিলাম টি তড়িঘড়ি করে দেওয়ায় অল্প কিছুসংক্ষক দরদাতা অংশ গ্রহন করেন,ফলে নিলামটি কাষ্টমস গুদাম কর্মকর্তা সরওয়ার আলমের যোগসাজসে নামমাত্র মুল্যে বিক্রয় করায় সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব হারায়।এতে কাষ্টমসের গুদাম কর্মকর্তা ব্যাক্তিগত ভাবে লাভবান হন।
কাষ্টমসের নিলাম সংক্রান্ত অফিস আদেশ অনুযায়ী বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও বিজিবি কতৃক জব্দকৃত মালামাল যদি অপচনশীল হয় তবে শুল্ক গুদামে জমা রাখা হবে।কাষ্টমসের বিভাগীয় কমিশনার,জেলার সহকারী কমিশনারের অনুমতি সাপেক্ষে, নিলাম কমিটি গঠন করে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রচার প্রচারনা চালিয়ে, লট আকারে গুদামের সমুদয় মাল সিডিউলের মাধ্যমে নিলাম আহ্বান করতে হবে।নিলামে অংশ গ্রহন কারী দের মধ্যে সর্বোচ্চ দরদাতা মালামাল পাবেন,সেক্ষেত্রে দরদাতার দর অবশ্যই নিলাম কমিটির মুল্য নির্ধারনী নির্দেশনা মোতাবেক দর হতে হবে,নইলে কাষ্টমস কতৃপক্ষ পুনরায় ওয়াকসনার এর মাধ্যমে নিলাম আহ্বান করিবেন।
পাটগ্রাম কাষ্টমসের সরওয়ার আলম সুপারি নিলামের ক্ষেত্রে সেই নির্দেশনা মানেন নি,নিলামের পূর্বে স্থানীয় ভাবে মাইকিং, সরকারি দপ্তরে বিজ্ঞপ্তির চিঠি, টাস্ক ফোর্সের সদস্য হিসেবে পুলিশ অথবা কোন ম্যাজিস্ট্রেট সেখানে উপস্থিত ছিলনা বলে স্থানীয়রা নিশ্চিত করেন।
পাটগ্রাম কাষ্টমস শুল্ক গুদামে অপচনশীল অন্যান্য দ্রব্য ইতিপূর্বে বিজিবি কতৃক জমা থাকলেও জেনারেল নিলামের জন্য সেগুলো গুদামজাত রয়েছে বছরের পর বছর ধরে। জনমনে প্রশ্ন জেগেছে পাটগ্রাম শুল্ক গুদাম কর্মকর্তা কোন অনৈতিক সুবিধার কারনে,জমা দেবার দু দিনের মধ্যে তড়িঘড়ি এই নিলাম দিলেন।
গুদাম কর্মকর্তা সরওয়ার আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ এটিই প্রথম নয়,বুড়িমারি বন্দরে জব্দকৃত লাগেজের মালামাল শাড়ি,কসমেটিকস,ইমিটেশন গয়না,ঔষধ,থ্রি পিস,সাইকেল সহ পাটগ্রাম শুল্ক গুদামে যা জমা হয়, রাতের আঁধারে একটি সিন্ডিকেটের কাছে ভাল মাল বদল করে নিম্ন মানের অকেজো মালামাল গুদামে রেখে দেন, এর ফলে লক্ষ লক্ষ টাকা এই বাবদ উৎকোচ গ্রহন করে তিনি ব্যাক্তিগত লাভবান হয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পাটগ্রাম গুদাম এলাকার কয়েকজন ব্যাবসায়ী অভিযোগ করেন,বিজিবির জব্দকৃত দামী মালামাল গুদামে নেই এগুলো সিন্ডিকেট এর কাছে রাতের আঁধারে চলে গেছে, এখন গুদামে যা আছে তা কমদামী,মেয়াদউত্তীর্ন মালামাল। এ যেন কাজীর গরু গোয়ালে নেই খাতায় আছে।
এদিকে গত ২৭আগষ্ট সৈয়দপুর থেকে পাটগ্রামে যাবার পথে ৫১বিজিবি ২৭বস্তা শুকনা সুপারি আটক করে, সুপারির প্রকৃত মালিক গন সৈয়দপুর মোকামের কাগজ পত্র দেখালে বিজিবি সুপারি ব্যাবসায়ীদের কথা কোন কর্নপাত করেনি,ভারতে পাচার হচ্ছে এই অভিযোগ তুলে বিজিবি জব্দতালিকা তৈরী করেন।রহস্যজনক কারনে সুপারি পরিবহনে ব্যবহৃত পিকাপের চালক ও হেল্পার কে সাদা কাগজে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেন।আটক সুপারি মঙ্গলবার প্রযন্ত কাষ্টমসে বিজিবি জমা দেয়নি,বুধবার তড়িঘড়ি করে ২০০০কেজি সুপারির মধ্যে ১হাজার ৬১৯কেজি সুপারি জব্দ তালিকা করে কাষ্টমসে জমা দেয়।কাষ্টম বুধবার ভারী বর্ষনের মধ্যে আটক কৃত সুপারি তড়িঘড়ি করে ৪০০ টাকা কেজি বাজার মূল্যের সুপারি সিন্ডিকেট করে ২৫০টাকা কেজি তে বিক্রি করে।সরকার এতে বিপুল পরিমান রাজস্ব হারায়।
এদিকে পাটগ্রাম বাজারের ব্যাবসায়ীদের শুকনা সুপারি ৫১বিজিবি কোন কারন ছাড়াই আটক করায় আইনি লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন ব্যাবসায়ীরা।