স্টাফ রিপোর্টার: ময়মনসিংহ ব্রহ্মপুত্র নদে আগামীকাল সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় অনুষ্ঠান অষ্টমী স্নান। উৎসবটি উদ্যাপন করছে বৃহত্তর ময়মনসিংহের হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। ব্যাপক ভাবগাম্বীর্য্য ও উৎসাহ উদ্দিপনার মধ্য দিয়ে এই উৎসব পালিত হচ্ছে। ৮ এপ্রিল ২৪ চৈত্র শুক্রবার দিবাগত রাত ৯ টা ১১তে স্নানের লগ্ন শুরু হবে। স্নান উৎসব শেষ হবে আগামীকাল শনিবার দিবাগত রাত ১১টায়। মন্ত্র পাঠ করে ফুল, বেলপাতা, ধান, দূর্বা, হরীতকী, ডাব, আম্রপল্লব নিয়ে পুণ্যার্থীরা স্নানে অংশ নিবেন।
ময়মনসিংহ নগরীর পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্র নদের থানাঘাট, কাচাঁরীঘাট, গুদারাঘাট, বেগুনবাড়ী ঘাট, কালিবাড়ী ঘাট ও কালিরবাজার (ফাতেমানগর) এলাকাসহ ব্রহ্মপুত্র নদের বিভিন্ন ঘাটে বৃহত্তর ময়মনসিংহের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে আসা পুন্যার্থীদের ঢল নামবে। প্রতি বছরই এই পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদে স্নানোৎসব অনুষ্ঠিত হয়। পাপমোচনের আশায় হাজার হাজার পুণ্যার্থীরা পালন করে পূজাঁ পার্বন ও বিভিন্ন ধর্মীয় আচাঁর অনুষ্ঠান। ঠাকুর, পুরুহিতরা এই আচাঁর অনুষ্ঠান পালনে সহযোগিতা করবেন।
পুণ্যস্নানের পাশাপাশি পুণ্যার্থীরা দেশ ও দেশের সকল জনগনের মঙ্গল ও শান্তি কামনায় প্রার্থনা করবেন। ধর্মীয় বিশ্বাস আর অনুভ’তি থেকে প্রতি বছরেই পাপমোচনের জন্যে এখানে স্নান করতে আসেন পুন্যার্থীরা।
চৈত্রমাসের শুক পক্ষের অষ্টমী তিথিতে গঙ্গা এই বহ্ম্রপুত্রে আসেন, এই সময়েই পুণ্যার্থীরা পাপ মোচন ও কল্যানের জন্যে স্নান করতে এই ব্রহ্মপুত্র নদে আসেন।
এছাড়াও আজ নগরীর দুর্গাবাড়ী মন্দিরে অনুষ্ঠিত হবে বাসন্তী পূজা। রামায়ণ অনুসারে, অশুভ শক্তির বিনাশের উদ্দেশ্যে শ্রীরামচন্দ্র শরৎকালে দেবী দুর্গার আরাধনা করেছিলেন, যা অকাল বোধন হিসেবে খ্যাত। আর পুরাণ অনুযায়ী, চন্দ্র বংশীয় রাজা সুরথ বসন্ত কালে দেবী দুর্গার আরাধনা করেন। কালের পার্থক্য হলেও আরাধনা কিন্তু দেবী দুর্গারই।
শরৎকালে শারদীয়া দুর্গা পূজা, আর বসন্ত কালে দেবীর আরাধনা বাসন্তী পূজা হিসেবে প্রসিদ্ধ। উভয় পূজার রীতিও প্রায় একই। ইতিহাস বলছে, চৈত্র মাসের শুকপরে বাসন্তী পুজোই প্রকৃত দুর্গা পুজো। যদিও একালে আশ্বিন শুকপরে বা শরতের দুর্গা পুজোই অন্যতম প্রধান পুজোর স্বীকৃতি পেয়েছে। কিন্তু তবুও বাঙালি আদি দুর্গাপুজোকে কোনওদিনই পুরোপুরি ভুলে যায়নি। তাই এখনও বাংলার অনেক জায়গায় দুর্গা পুজোর আদিরূপ বাসন্তী পুজোর আয়োজন করা হয়। চলতি বছর বাসন্তী পূজা পড়েছে ৯ এপ্রিল, শনিবার।