আুবল হাশেম,ধোবাউড়া(ময়মনসিংহ) থেকে : অনিমেষ রায়। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পাশে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার গারো পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত বগাজড়া গ্রামের বাসিন্দা।পাহাড় নদীসহ সবুজঘেরা প্রকৃতির সাথে বেড়ে উঠা। ছোটকাল থেকেই গানের প্রতি অসম্ভব নেশা। পড়াশোনার পাশাপাশি অবসর সময়ে গান চর্চা করতেন। এভাবেই এইচ.এস.সি উত্তির্ণ হওয়ার পর ভর্তি হোন ত্রিশাল নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঘটনাচক্রে পেয়ে যান সংগীতের বিষয়। সেই থেকে গানের প্রতি শুরু আরও আগ্রহ।এরই মাঝে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ¯স্নাতক উত্তির্ণ হয়েছেন। করোনা ভাইরাস এর প্রভাবে গত ২ বছরের বেশী সময় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় সেই গারো পাহাড়ের পাদদেশে বগাজড়া গ্রামে অবসর সময় কাঠান। এরই ফাঁকে ধোবাউড়ার পর্যটন এলাকা চিনামাটির পাহাড়ে বসে গান গাওয়া শুরু করেন। তার পাশে থেকে বাদ্যযন্ত্রে সহযোগিতা করতেন বন্ধু কলসিন্দুরের জাহিদ ও নয়ন। গানগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পেইজ খুলে এবং নিজের ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করতে থাকেন। এভাবে ধীরে ধীরে পরিচিতি পেতে থাকেন অনিমেষ রায়। কয়েকটি গান নিজের হাজং ভাষায় গেয়েছেন। সেই গানগুলো ভাইরাল হতে থাকে। হাজংদের নিজস্ব কোন বর্ণমালা নেই। তারপরও নিজের ভাষার গান গেয়ে নজরে আসে বিভিন্ন খ্যাতিমান গায়কের। অবশেষে কুক স্টুডিও বাংলায় হাজং ভাষায় নাসেক নাসেক গান গেয়ে বাংলাদেশের জনপ্রিয় সংগীত শিল্লী হয়ে উঠেন অনিমেষ রায়।নিজের লেখা ও সুর করা গান গেয়ে দর্শক মাতিয়েছেন অনিমেষ রায়। সঙ্গে পেয়েছেন পান্থ কানাইকে।তিনি জানান, ‘পান্থ দা আমাকে সাহস দিয়েছেন। নিজের ইউটিউবে এবং পেইজে গান দেখেই মূলত সংগীতশিল্পী শায়ান চৌধুরী অর্ণব খুঁজে নেন আজকের তারকা অনিমেষকে। এ ব্যাপারে অনিমেষ রায় বলেন, ‘আমি হাজং সম্প্রদায়ের জানার পর আমাদের ভাষায় কোনো গান আছে কি না জানতে চান অর্ণব দা। আমি তাকে জানাই নিজের কথা। অনেকগুলো গান শুনে ‘নাসেক নাসেক’ গানটি বেছে নেন তিনি। যার অর্থ ‘নাচো নাচো’।’ নিজের ইউটিউব চ্যানেলে ফোক গান প্রকাশ করেন অনিমেষ। তার ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা প্রায় ১ লক্ষ ছাড়িয়েছে। কোক স্টুডিওর আগে পার্থ বড়–য়ার তত্ত্বাবধানে ‘আইপিডিসি আমাদের গান’-এ নিজের লেখা ও সুরে গান করেছেন তিনি। এরপরই গাইলেন ‘কোক স্টুডিও বাংলা’র জন্য। কুক স্টুডিও বাংলায় নাসেক নাসেক গান গেয়ে দেশের জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী হয়ে উঠেন অনিমেষ রায়। নিজের এলাকা ধোবাউড়ায় ব্যাপক প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন বন্ধু বান্ধব ও শুভাকাঙ্খীরা। এ ব্যাপারে অনিমেষ রায় জানান,সবচেয়ে ভালো লাগা হচ্ছে মানুষ আমাকে টেনে টেনে তুলছে,মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি,আরও সামনে এগিয়ে যেতে চাই।