আবুল হাশেম,ধোবাউড়া(ময়মনসিংহ) : নদীমাতৃক দেশ আমাদের এই বাংলাদেশ। দেশের সব জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অসংখ্য নদ,নদী।ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী ধোবাউড়া উপজেলারও বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অন্তত ১০ টি নদী। কিন্তু দখল,দূষণ এবং নাব্যতা হারিয়ে অস্তিস্থ্য সংকটে রয়েছে সেইসব নদ নদীগুলো। মরাখালে পরিনত মানচিত্র থেকে মুছে যাওয়ার অবস্থায় রয়েছে এসব নদী।তাইতো মানুষও ভুলতে বসেছে মাছে ভাতে বাঙ্গালী এই প্রবাদ বাক্যটি। নাব্যতা হারিয়ে নদীগুলো এখন বালুচরে পরিনত হচ্ছে। ফলে আগের মত নেই দেশীয় মাছ।ধোবাউড়ার ১০ টি নদীর মাঝে প্রধান দুটি নদী কংশ এবং নেতাই উপজেলার বিস্তৃর্ণ এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে।একসময় উপজেলার গোয়াতলা বাজার থেকে পোড়াকান্দুলিয়া বাজার পর্যন্ত কংশ নদী দিয়ে ব্যাপক যান চলাচল ছিল। নদী পথে বিভিন্ন স্থান থেকে মালামাল আমদানি রপ্তানি করা হত। বর্ষাকালে মাত্র কয়েকদিনে আগের মত নদীপথে কিছু যান চলাচল দেখা গেলেও কয়েকদিন পরেই তা আর দেখা যায়না বর্তমানে কংশ নদীর বুকে বালুচর ।নেই আগের সেই বিশাল জলারাশি।অপরদিকে নেতাই এর অবস্থা আরও খারাপ। স্নিগ্ধ, ¯্রােতস্বিণী নেতাই নদীর সেই জৌলুস আর নেই। নেই তার তর্জন-গর্জন। বিভিন্ন স্থানে দখল .দূষণ আর নাব্যতা সংকটে বিলিনের পথে ঐতিহ্যবাতী এই নদী।উপজেলার ঘোষগাও,দক্ষিণমাইজপাড়া,গামারীতলা ইউনিয়নসহ বিস্তৃর্ণ এলাকা জুড়ে ছিল নেতাই এর বিশাল ¯্রােতধারা এবং জলরাশি। কিন্তু প্রভাবশালীদের দখল আর খননের কোন উদ্যোগ না থাকায় মরানদীতে পরিনত হচ্ছে এই নেতাই নদী। বিভিণœ স্থানে বালুচরে পরিনত হয়েছে। ফলে কৃষি নির্ভর এলাকা হিসেবে বিপাকে পড়েছেন কৃষক।বর্ষাকালে বন্যার পানি আটকে থেকে দূর্বিসহ জীবন যাপন করেন নদীপাড়ের মানুষ। নদীতে পানি প্রবাহের ব্যবস্থা থাকলে এই বন্যার সৃষ্টি হতোনা বলে জানান,নদী পাড়ের ,মানুষ।সেচ মৌসুমে নদীতে পানি না থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হয় কৃষকদের।তারাকান্দি গ্রামের কৃষক মৌলাম হোসেন জানান,তারাই নদী থেকে ফসলের জন্য পানি দিয়ে ফসল ফলাতাম কিন্তু নদী ভরাট হয়ে দখল হয়ে যাওয়ায় সেই ব্যবস্থা এখন আর নেই।ধোবাউড়া উপজেলায় সাতারখালি,ঘাগটিয়া,তারাই,সুতিয়া,গুদাইরা,প্যাছাইসহ অন্তত ১০ টি নদী রয়েছে। এই নদীগুলোর বুকে এখন কেউবা ধান গাছ,কেউবা কৃষিপন্য রোপন করে দখল করে নিয়েছেন। অনেকে ঘের দিয়ে পানি আটকিয়ে মাছ ধরেন। সরেজমিন ঘুরে প্রায় সবগুলো নদীর এই চিত্র চোখে পড়েছে।এতে একদিকে যেমন ফসলে সেচের অভাব দেখা দিয়েছে অন্যদিকে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে দেশীয় মাছ ।ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ বলেন,ভারত থেকে প্যাছাই নদীতে পানি আসলে কৃষকরা অনেক সুিিবধা পেয়ে থাকে কিন্তু খনন করা হলো কৃষকদের জন্য ভালো হতো। তিনি জানান,আমি ইউনিয়ন পরিষদের বরাদ্দ থেকে খননের ব্যবস্থা করব। এব্যাপারে উপজেহলা নির্বাহী অফিসার রাফিকুজ্জামান জানান,নদী খননের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে,আশা করছি খনন করা সম্ভব হবে। উপজেলা চেয়ারম্যান ডেভিড রানা চিসিম জানান,কৃষকদের সুবির্ধাথে আমরা ইতোমধ্যে দু,একটি ছোট নদী খননের উদ্যোগ নিয়েছি।সচেতন মহল মনে করেন নদী বাঁচাতে ড্রেজিং করে প্রতিবছর যাতে পলি ভরাট না হয় সেজন্য মূল নদে ব্যারেজ নির্মাণ করা জরুরী। এছাড়াও নদী শাসন,বাঁধ নির্মাণ,বড় নদীগুলোর সাথে ছোট ও শাখা নদীগুলোর মুখ বন্ধ হয়ে যাওয়া রোধ করা না গেলে নদীকে বাঁচানো সম্ভব না ।