জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলায় গত ৫ জানুয়ারী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে পুলিশের উপর হামলা,গাড়ী ভাংচুর,গাড়ী পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় ৯২ জনসহ অজ্ঞাত প্রায় ১৬শত জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বকশীগঞ্জ থানার এসআই আবু শরিফ বাদী হয়ে গত ৬ জানুয়ারি মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রধান আসামী মেরুরচর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোয়ার হোসেন ওরফে হককে হুকুমের আসামী করে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলাটি দায়ের করেন। বকসিগঞ্জ থানার মামলা নং-২। তারিখ ০৬/০১/২০২২।
মামলার বাদী এসআই আবু শরীফ তিনি মামলায় উল্লেখ করেছেন, গত ৫ জানুয়ারি বকশীগঞ্জ উপজেলার মেরুরচর ইউনিয়নের মেরুরচর হাসেন আলী উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে শান্তিপূণর্ ভাবে ভোট গ্রহন চলছিলো। হঠাৎ স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোয়ার হোসেন (হক) এর নেতৃত্বে একদল উশৃংখল জনতা কর্তব্যরত পুলিশের উপর হামলা করে ব্যালট বাক্স ছিনতাই করার চেষ্টা করে। পুলিশ তাতে বাধা দিলে পুলিশের ওয়াকিটকি ছিনতাই করে নেয় হামলাকারীরা। এ সময় উশৃংঙ্খল জনতা পুলিশের একটি পিক-আপ ভ্যান(জামালপুর-ঠ-১১-০০২৩)গাড়ীসহ ৩টি গাড়ীতে অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ মোট ১৬০টি বুলেট ও ৩২টি টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে। ঐ হামলায় বকশীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ(তদন্ত) আব্দুর রহিম, এসআই আবু শরীফ, এসআই রাজু আহমেদ, এএসআই মজনু মিয়া, আশরাফুল মৃধা, কনেস্টেবল আতোয়ার রহমান, রঞ্জু শেখ, আব্দুল মজিদ, আব্দুল আলীম, শাহজাহান, শাহিন, সুজন মিয়া, আলাল উদ্দিন, রবিউল, আবু তাহের, রিফাত হোসেন, নায়েক মাজেদুল ইসলাম, আনসার পিসি সুমন মিয়া ও এপিসি আল মাহমুদসহ আইনশৃংখলা বাহিনির ১৯ জন সদস্য গুরুত্বর আহত হয়। গুরুত্বর আহত অফিসার ইনচার্জ(তদন্ত)আব্দুর রহিম রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঐ মামলায় ৭জনকে গ্রেফতার দেখিয়ে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছেন মামলার বাদী।
এ দিকে পুলিশের মামলার ভয়ে উপজেলার মেরুরচর, ফকিরপাড়া, বাঘাডুবা ও ভাটি কলকীহারা ৪টি গ্রাম শতভাগ পুরুষ শূন্য হয়ে অভিভাবকদের সাথে শিশু ও বৃদ্ধরাসহ প্রায় ১৫ হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে বেড়াচ্ছেন। খোঁজ নিয়ে জানাযায়, গত শুক্রবারের জুম্মার নামাজের সময় মসজিদ গুলো ছিলো ফাকাঁ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল খুবই নগন্য। শুক্রবার বার্ধক্য অসুস্থতা জনিত কারনে মেরুরচর গ্রামে ৩ জনের মুত্যু হলে মৃত ব্যক্তিদের দাফন করতে সাহস পাননি কেউ। ফলে বকশীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ তালুকদার ও পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম সওদাগরের নেতৃত্বে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় মৃত ব্যক্তিদের লাশ দাফন করা হয়েছে বলে উল্লেখিত ব্যক্তিদ্বয় জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে জামালপুরের পুলিশ সুপার নাসির উদ্দিন আহমেদ এর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ভিডিও ফুটেজ দেখে মুল অপরাধীদের সনাক্ত করা হচ্ছে। ঘটনার সাথে যারা জড়িত না,তাদের কোন প্রকার ভয়ের কারণ নেউ। তাদের কোন রূপ হয়রানী করা হবে না বলে তিনি জানান।