গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) সংবাদদাতা : ময়মনসিংহের গৌরীপুরের কান্দুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাতায়াতের জন্য কোন রাস্তা নেই। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে বাড়ির আঙিনা ও পুকুরের ভাঙা পাড় ব্যবহার করতে হয়। বিদ্যালয় সংলগ্ন বাসিন্দা বাবুল হোসেন নিজের মেয়েকে বিদ্যালয়ে চাকরি দেয়ার শর্তে বিদ্যালয়ের রাস্তার জমি দিতে রাজি আছেন। তবে শর্ত পূরণে অপরাগতা প্রকাশ করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রভাতী বালা রক্ষিত বলেন, রাস্তা না থাকায় স্কুলের উন্নয়ন প্রকল্পের নির্মাণ সামগ্রী আনতে অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। রাস্তার জন্য জনপ্রতিনিধি, গণ্যমান্য ও অভিভাবকদের নিয়ে বাবুল ভাইকে অনুরোধ করেছি। কিন্ত মেয়েকে চাকরি না দিলে তিনি রাস্তা দিবেনা।
জানা গেছে, উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের কান্দুলিয়া গ্রামে ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টি ২০১৩ সালে জাতীয়করণ হয়। বিদ্যালয়ে শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ১৪৩ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। স্থানীয় শিক্ষানুরাগী চারজন ব্যক্তি জমি ক্রয় করে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার জন্য কোন রাস্তা হয়নি।
কান্দুলিয়া গ্রামের সড়কের পাশেই বাবুল হোসেনের প্রায় কয়েক কাঠা জমির পুকুর। বিদ্যালয়টির অবস্থান পুকুরের পশ্চিম পাড়ে। মূল সড়ক থেকে বিদ্যালয়ে যেতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বাড়ির আঙিনা কিংবা পুকুরের পাড় ব্যবহার করতে হয়। শুকনো মওসুমে যাতায়াত কষ্ট না হলেও বর্ষাকালে পুকুরের পানি বেড়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়তে হয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পুকুরের পাশ দিয়ে রাস্তা করার জন্য বাবুলের কাছে দাবি জানায়। কিন্ত নিজের উচ্চ মাধ্যমিক পড়–য়া মেয়েকে বিদ্যালয়ে দপ্তরী-কাম নৈশ প্রহরীর চাকরি না দিলে রাস্তার জমি দিবেন না বলে জানিয়ে দেন বাবুল।
বাবুল হোসেন বলেন, বিদ্যালয়ের জন্য আমরা অনেক কিছু করছি। বিদ্যালয়ের রাস্তার জন্য আমার জমি দিতে আপত্তি নেই। তবে আমার মেয়েকে বিদ্যালয়ে চাকরি দিতে হবে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার মনিকা পারভীন বলেন, বিদ্যালয়ের রাস্তার জন্য বাবুল হোসেনকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বুঝিয়ে শুনিয়ে রাজি করার চেষ্টা চালাচ্ছি। যোগ্যতার ভিত্তিতে উনার মেয়েকে স্কুলে পার্টটাইম কিংবা আনন্দস্কুলে চাকরি বিষয়ে উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। তবে রাস্তার বিনিময়ে দপ্তরী-কাম নৈশ প্রহরীর চাকরি দেয়ার সুযোগ নেই।