ময়মনসিংহ সদর উপজেলার পুটিয়ালীর চর, বাড়েরার পাড় ও চর ঘাগড়া গ্রামের সহস্রাধিক একর উর্বর কৃষি জমি ধ্বংসে বেপরোয়া হয়ে পড়েছেন সোহেল ও চঞ্চল নামের দুটি ইটভাটার মালিক।
বোরো মৌসুমে এখানে প্রায় ৫ হাজার মেট্রিকটন ধান উৎপন্ন হয় । এই যায়গার উৎপাদিত ধান দিয়েই এলাকার মানুষ জীবন ধারণের যাবতীয় ব্যয় নির্বাহ করে । সোহেল এবং চঞ্চল এর মালিকানাধীন দুটি ইট ভাটাটি এই দুই বিলের মাঝখানে কয়েক বছর যাবৎ কৃষি কাজের বেঘাত সৃষ্টি করে আসছে। এতে ফসল উৎপাদন বহুলাংশে কমে গেছে । বর্তমানে মরার উপর খাড়ার ঘা হিসেবে ইটভাটার মালিকগণ অত্র এলাকার ফসলি ভূমি থেকে ভেকু (মাটিকাটার আধুনিক ভারী যন্ত্র ) দিয়ে গভীর গর্ত করে মাটি নিয়ে যাচ্ছে ইট তৈরির জন্য । ধৃর্ত ইটভাটার মালিকগণ কতিপয় হত দরিদ্র কৃষককে মোটা অংকের টাকার লোভ দেখিয়ে কৃষি জমির মাটি খরিদ করে গভীর গর্ত করে মাটি নিয়ে নিচ্ছে । এমনকি বোরো রোপনকৃত জমিও বাদ যাচ্ছে না । বিশাল গর্ত করে মাটি খনন করার ফলে আশপাশের কৃষি জমি ভেঙ্গে গর্তে পড়ছে । ফলে ফসল আবাদ করা যাচ্ছে না । ভুক্তভোগী কৃষকগণ নিরূপায় হয়ে ইটভাটার মালিকগণের কাছে তাদের জীবিকার একমাত্র অবলম্বন কৃষি জমির মাটি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন ।
এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই কাটারিয়া ও চালিয়াকুড়ি বিলের ফসল উৎপাদন সম্পূর্ণ ভাবে অনিশ্চিত হয়ে পড়বে । পানি নিষ্কাশনের খাল গুলোও অগভীর হওয়ায় বিলের পানি কখনই কমবে না । উর্বর ফসলি জমি অপ্রয়োজনীয় জলা ভূমিতে পরিণত হবে । এতে করে অত্র এলাকার কৃষি নির্ভর কৃষকগন কর্মহীন হয়ে পড়বে । ফলে খাদ্যে সয়ংসম্পূর্ণ এই এলাকাটিতে ব্যাপক খাদ্য ঘাটতি দেখা দিবে । উর্বর ফসলি জমি জলাভূমিতে পরিণত হওয়ার ফলে বন্যার সৃষ্টি হবে, গরু ছাগল চড়ানোর মতো জায়গাও থাকবে না । ফলে পরিবেশের বিপর্যয় ঘটবে । এলোমেলো ভাবে জমি খনন করার ফলে জমির কোন সীমানা চিহ্ন থাকছেনা। এতে কৃষকদের মাঝে সীমানা বিরোধ-ঝগড়া ফেসাদ সৃষ্টি হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেখানে দেশকে খাদ্যে সংসম্পূর্ণ করতে কৃষি জমিতে বাড়ি তৈরী করা বা পুকুর খনন করাও নিষেধ করছেন সেখানে বিত্তশালী ক্ষমতাবান ইটভাটার মালিকগণ সম্পূর্ণ অবৈধভাবে দরিদ্র কৃষকগণের দারিদ্রতার সুযোগ নিয়ে একরের পর একর কৃষি জমি জলাভূমিতে পরিণত করছেন । কোন ভাবেই ইটভাটার মালিকগনের আগ্রসন থামছে না।
এমতাবস্থায় এই একালার জনগণের জীবিকার কথা ভেবে , দেশকে খাদ্যে সয়ংসম্পূর্ণ করার কথা ভেবে , পরিবেশ বিপর্যয়ের কথা ভেবে, সর্বোপরি , দেশকে সোনার বাংলা করে গড়ে তুলতে প্রধান মন্ত্রীর নির্দেশনার কথা ভেবে উর্ভর ফসলি জমিকে জলাভূমিতে পরণত করার অবৈধ কার্যক্রমকে অবিলম্বে বন্ধ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করছেন এলাকার ভুক্তভোগী জনগণ ।