বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৪ পূর্বাহ্ন
নোটিশঃ
বিডি ২৪ ক্রাইম সাথে থাকুন। আপডেট খবর পড়ুন

লালমনিরহাটে ভুয়া বিল ভাউচার দিয়েই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সরকারি টাকা আত্বসাৎ

রির্পোটারের নাম / ১৮৪ বার প্রিন্ট / ই-পেপার প্রিন্ট / ই-পেপার
আপডেট সময় :: মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২২, ১:৩৯ অপরাহ্ণ

এস,আর শরিফুল ইসলাম রতন, লালমনিরহাট

ভূয়া বিল ভাউচারের বিনিময়ে সরকারি স্কুলের রুটিন মেরামত ও স্লিপের বরাদ্ধ আড়াই লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার আমঝোল কাজিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে।

উপজেলা শিক্ষা অফিস সুত্রে জানা যায়, চলতি ২১-২২ অর্থ বছরের জরুরী মেরামতের জন্য ওই স্কুল বরাদ্ধ পায় ২ লক্ষ টাকা ও স্লিপ বরাদ্ধ ৫০ হাজার টাকা। কিন্তু নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই সংশ্লিষ্ট সহকারী শিক্ষা অফিসার মিঠুন বর্মন ও প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বার মিলে স্কুলের কোন কাজ না করে ভূয়া বিল ভাউচার দিয়ে বরাদ্দের পুরো টাকাই উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এমন অভিযোগের ভিত্তিতে ২৭ নভেম্বর সরেজমিনে ওই স্কুলে দুপুর ৩ টায় গিয়ে দেখা যায়, দুইজন শিক্ষকসহ স্কুলে উপস্থিত শিক্ষার্থীর সংখ্যা নয় জন। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর জন্য নেই পর্যাপ্ত চেয়ার টেবিল ও বেঞ্চের ব্যবস্থা। ঘরের বেড়া গুলো ভাঙাচুরা। কুকুর বিড়াল ছাগল গরু একদিকে ঢুকে আর দিকে যেতে পারে। ভিতর থেকে দেখা যায় আকাশ।

স্কুলটি দ্বিতল ভবন বরাদ্ধ পেলেও কাজ শেষ না হওয়ায় এখনো ভবনটি হস্তান্তর করেনি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার।

স্কুলের পাঠদান চলছিলো পাশে অবস্থিত ভাংগা চোরা টিনশেট ঘরে। যেখানে ছাত্রদের বসার মত ছিলোনা পর্যাপ্ত ব্রেঞ্চ। স্কুলের শিক্ষকের অফিস কক্ষে ছিলো ভাংগা দুটি প্লাস্টিকের চেয়ার ও একটি ছোট টেবিল। অথচ এই ভাংগাচুরা টিনশেট ঘরের মেরামত, টাইলস, আসবাবপত্র ক্রয়ের নামে ভুয়া বিল ভাউচার দিয়ে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেন ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ এডহক কমিটির সভাপতি। কাগজে কলমে লক্ষলক্ষ টাকার ভুয়া বিল ভাউচার থাকলেও স্কুলে তার উপস্থিতি কিছুই চোখে পড়েনি।

ভুয়া বিল ভাউচার সুত্রে জানা যায়, ভাঙ্গাচুরা টিনশেট ঘরের ওই স্কুলের ফ্লোর টাইলস বাবদ ২১+২১=৪২ হাজার টাকা, সিমেন্ট ক্রয় বাবদ ১৬ হাজার টাকা, বালু ক্রয় ও পরিবহন বাবদ ৫ হাজার টাকা, লেবার বিল ২১ হাজার টাকা, আলমারি ক্রয় ২৪ হাজার টাকা, অডিনারী টেবিল ১টা ৩০ হাজার টাকা, কনফারেন্স টেবিল ১টা ৩২ হাজার টাকা, কাঠের হাতল চেয়ার ৫ টা ৩০ হাজার টাকাসহ মোট দুই লক্ষ টাকার মালামাল ক্রয় করা হয়েছে, যার কোন অস্তিত্বই ওই স্কুলে নেই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আমঝোল কাজিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বার বলেন, আমি সকল জিনিস পত্র ক্রয় করেছি। ভবনটি বুঝে পেলে কাজ গুলো সম্পন্ন করা হবে। জিনিস গুলো কোথায় আছে জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন, আপনাদের যা ইচ্ছে তা লিখেন সমস্যা নেই, আপনারা আমার একটিও______ছিড়তে পারবেন না বলে প্রতিবেদককে দেখে নেয়ার হুমকীও দেন তিনি।

এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার ও ওই স্কুলের এডহক কমিটির সভাপতি মিঠুন বর্মন বলেন, মেরামতের টাকাসহ স্লিপের টাকা আমরা স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে বুঝিয়ে দিয়েছি। কি করেছেন এর জবাব তিনি নিজেই দিবে। আমরা এর কোন দায় নিবোনা। কাজ না করে থাকলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার জাকির হোসেন বলেন, কাজ না করে বিল নেয়ার সুযোগ নেই। এমন হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজির হোসেন বলেন, এবিষয়ে আমাদের সরাসরি কিছুই করার নেই। যদি কোন এলাবাসী লিখিত করে তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জেলা শিক্ষা অফিসার স্বপন কুমার রায় চৌধুরী বলেন, আমি নতুন এসেছি। এবিষয়ে কিছুই জানা নেই।অনিয়ম হলে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মতামত লিখুন
Theme Created By ThemesDealer.Com