মঙ্গলবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:৪০ অপরাহ্ন
নোটিশঃ
বিডি ২৪ ক্রাইম সাথে থাকুন। আপডেট খবর পড়ুন

লালমনিরহাট ধরলা নদীতে ৭১-খোঁজে নদী যাত্রা শুরু করলেন কর্নেল তাহেরের ভাই ড,আনোয়ার হোসেন

রির্পোটারের নাম / ১৯৮ বার প্রিন্ট / ই-পেপার প্রিন্ট / ই-পেপার
আপডেট সময় :: শনিবার, ৫ নভেম্বর, ২০২২, ৫:১৫ অপরাহ্ণ

এস,আর শরিফুল ইসলাম রতন, লালমনিরহাট

লালমনিরহাট সদর উপজেলার ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে ধরলা নদীতে যাত্রা শুরু হলো ৭১- খোঁজে নদী যাত্রা।জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ব বিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড,আনোয়ার হোসেন মুক্তিযুদ্ধ কালীন সময়ে নদী পথে মুক্তিযুদ্ধের ভূমিকা উপলব্ধি করতে এই যাত্রা শুরু করেন।

মুক্তিযুদ্ধের ১১নং সেক্টর কমান্ডার কর্নেল তাহের এক জন দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন,তিনি দেশকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতেন,তেমনি একটি স্বপ্ন ছিল যা তিনি যুদ্ধ কালীন সময়ে তার অধীনে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ভাই বোনদের বলেছিলেন।এই যুদ্ধে যদি বেঁচে থাক তবে অন্তত একবার স্বাধীন বাংলাদেশে যেসব নদী ভারত থেকে উত্তর দিক দিয়ে প্রবেশ করেছে তার একটি দিয়ে যাত্রা শুরু করবে।নানা নদী বেয়ে যাত্রা শেষ করবে বঙ্গোপসাগরে।

ড,আনোয়ার হোসেন তার ভাই সেক্টর কমান্ডার কর্নেল তাহেরের মুক্তিযুদ্ধ কালীন সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন করতে সীমান্ত বর্তী মোগলহাটের ধরলা নদী থেকে যাত্রা শুরু করলেন।কর্নেল তাহেরের স্বাধীন বাংলাদেশ কে নিয়ে যে স্বপ্ন ছিল,সেই কথা গুলো সেই স্বপ্ন গুলো নিজের ভাষায় অকপটে বলেছেন এভাবেই ।

যাত্রাপথে গভীর মনোযোগে উপলব্ধি করবে বাংলার অপরূপ সৌন্দর্য্য।কথা বলবে বাংলার সাধারন মানুষের সাথে,তাদের সুখ দুঃখ আশা আকাঙ্খার কথা,সাধারন কৃষক,মুক্তিযোদ্ধা,শহীদ পরিবারের কথা শুনবে।সেই সাথে সেই সব অসহায় নারী পুরুষ,যাদের হাতে অস্ত্র ছিলনা,কিন্তু তারপরেও মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দিয়েছে, নিজেরা না খেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের খাবার দিয়েছে,শত্রু দের নির্ভুল অবস্থান বলেছে,পরিনামে অকাতরে জীবন দিতে হয়েছে,কত মা বোন ধর্ষিত হতে হয়েছে,সেইসব বীরত্ব গাঁথা মানুষদের কথা শুনবে।গ্রাম বাংলার দরিদ্র মানুষের কথা শুনবে,তাদের সমস্যার কথা শুনবে এবং তা সমাধানে তাদের ভাবনা জানতে চাইবে।তারপর কত বছর পেরিয়ে গেছে ,নানা ঝড় ঝঞ্জা বয়ে গেছে সকলের জীবনে।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু,জাতীয় চার নেতা,কর্নেল তাহের সহ শত শত মুক্তিযোদ্ধা ,কত দেশ প্রেমিক মানুষ যাদের কথা কর্নেল তাহের আমাকে বলেছেন,তাদের অসময়ে হারিয়ে ফেলেছি,তাদের স্বপ্ন পুরন করতে পারিনি,তবে স্বপ্ন হারাতে দেইনি।

গত নভেম্বরে আমার ৭০ বছর পেরিয়ে গেছে,ভেবে দেখলাম আর দেরি নয়,লালমনিরহাটের মোগলহাটে ভারত থেকে ধরলা নদী প্রবেশ করেছে,গত শীতের আগে সেখানে গিয়ে জানলাম বিপ্লবী কৃষক নেতা নুরুল দীন যিনি তার কৃষক গনবাহিনী দ্বারা ইংরেজ দের বিরুদ্ধে বৃটিশদের তাবেদার জমিদারদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র লড়াই করেছেন,তিনি ঘাঁটি গেড়েছিলেন মোগলহাটে।সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের অমর সৃষ্টি ‘নুরুল দিনের সারা জীবন’ কাব্যনাট্যের নায়ক নুরুল দিনের উদাত্ত ডাক জাগো, বাহে,কোনঠে সবায়,বাংলার বিপন্ন কৃষক জনসাধারন কে আন্দোলিত করতে থাকবে অনাগত কাল ধরে।সেসব মনেপড়ে গেল তখনই সিদ্ধান্ত নেই মোগলহাটের পাশ দিয়ে ভারত থেকে প্রবেশ করা নদী ধরলা থেকে আমাদের যাত্রা শুরু করবো।একাত্তরে নদী ও নৌকা ছিল বিপন্ন মানুষের বেঁচে থাকার ভরসা।

মুক্তিযোদ্ধাদের বাহন ছিল নৌকা, নদী এবং নৌকা দেখে ভয় পেত পাক হানাদার বাহিনী।আজ ০৪ নভেম্বর ২০২২ একটি দেশী নৌকায় আমাদের স্বপ্ন যাত্রা শুরু হলো।

ধরলা হয়ে পুরাতন বম্রপুত্র তার সাথে যুক্ত হয়ে যমুনা ধরে বঙ্গবন্ধু সেতুর নীচে এবারের যাত্রা শেষ হবে,সময় পেলে আগামী বছর ২০২৩ সালে এমন সময় আবার যাত্রা শুরু হবে,যমুনা ধরে রাজবাড়ি জেলায় দৌলদিয়া পদ্মা নদীতে মিলিত হবে,পদ্মা বেয়ে এগুবে চাঁদপুর মেঘনা নদীতে,শেষ নদী বেয়ে মিলিত হবে হাতিয়ায় বঙ্গোপসাগরে মোহনায়।

৭১-এর খোঁজ নদী যাত্রা -এই শিরোনামটি প্রস্তাব করছেন প্রথম আলো লালমনিরহাট সংবাদদাতা আঃরব সুজন,৭৭এর মুক্তিযুদ্ধে গ্রাম বাংলার সাধারন মানুষ যারা আত্মত্যাগ করেছেন বিনিময়ে তেমন কিছু পাননি, তাদের কথা শুনতে এই নদী যাত্রার কথা বলেছিলেন কর্নেল আবু তাহের বীর উত্তম,স্বাধীন বাংলায় যখন ফাঁসির মঞ্চে তিনি দাঁড়িয়েছেন,তখনও কারাগারের উঁচু দেয়াল অতিক্রম করে বিপ্লবী তাহেরের স্বপ্নময় দৃষ্টি বাংলার নদী মাঠ বাংলার বঞ্চিত নিপীড়িত দরিদ্র জন সাধারণের উপর পড়েছিল,যাদের মুক্তির জন্য কর্নেল তাহের অকাতরে জীবন উৎসর্গ করেছেন।স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে ৭১ এর খোঁজে নদী যাত্রায় আমরা সামিল হয়েছি।চলতে চলতে আমরা থামবো সাধারন মানুষের সাথে কথা বলবো যাদের সাথে অনেক দিন কথা হয়না , আমরা জানাতে থাকবো আপনাদের।

এবারের যাত্রায় সামিল হয়েছেন বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সহকারি পরিচালক মোগলহাটের কৃতি সন্তান ফেরদৌস আলম,তার বিপুল উৎসাহ এবং তার ব্যাপক কর্ম উদ্যোগ এই যাত্রার সফলতার রুপ পেয়েছে, নদী যাত্রায় সফর সঙ্গী হয়েছেন সালাউদ্দিন রাজ্জাক রানা,জিয়াউদ্দিন রাজ্জাক অপু,বিপ্লবী সৈয়দ বাহারুল হাসান সবুজ,ওবায়দুল হক,মাহাবুল হক নৌকার মাঝি হিসেবে রয়েছেন পুরো পথে।

ড,আনোয়ার হোসেন বলেন এবারের যাত্রা শুরু করলাম পরের যাত্রা কোন কারনে শুরু করতে না পারি তবে আক্ষেপ করবো না,কারন আমাদের পরের প্রজন্ম এটা শেষ করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মতামত লিখুন
Theme Created By ThemesDealer.Com