শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৪১ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
নোটিশঃ
বিডি ২৪ ক্রাইম সাথে থাকুন। আপডেট খবর পড়ুন

সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থ হরিলুট! দীর্ঘদিনে সংস্করণ হয়নি রেলওয়ে অফিসার্স ক্লাব

রির্পোটারের নাম / ১৯১ বার প্রিন্ট / ই-পেপার প্রিন্ট / ই-পেপার
আপডেট সময় :: বুধবার, ২ নভেম্বর, ২০২২, ১০:৩৩ পূর্বাহ্ণ

এস,আর শরিফুল ইসলাম রতন, লালমনিরহাট

লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগীয় অফিসার্স ক্লাবটি দীর্ঘ (দুই-যুগ) ধরে সংস্করণ হয়নি। ক্লাবটি দেখার কেউ নেই।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, লালমনিরহাট জেলা ৭৭ টি রেল স্টেশন নিয়ে রেলওয়ে (Division) বিভাগ গঠিত। এই বিভাগে মাত্র একটি রেলওয়ে অফিসার্স ক্লাব। যেখানে রেলওয়ের বিভিন্ন কর্মচারিরা সরকারি অনুষ্ঠান, বিয়ে শাদির অনুষ্ঠানসহ অন্যান্য অনুষ্ঠান আয়োজন করেন। রেল কর্মচারিদের পাশাপাশি অফিসার্স ক্লাবটি জনগনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য ১২ ঘন্টায় ৩০০০ (তিন হাজার) টাকা চুক্তিতে ভাড়া দেওয়া হয়।

লালমনিরহাট বিভাগীয় অফিসের প্রকৌশলী অফিসার (ডি-এন) এর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে রেলওয়ে অফিসার্স ক্লাবটি, যা দীর্ঘ দুই যুগেও সংস্করণ হয়নি। বিয়ে-শাদি ও অন্যান্য অনুষ্ঠান করার জন্য অফিসার্স ক্লাবটি সংস্করণ করা জরুরি কেননা মনোরম পরিবেশে ক্লাবটি অবস্থিত। সেখানে নেই কোন কোলাহল, নেই কোন জনসমাগম। ভিতরে রয়েছে গাড়ি রাখার বিশাল মাঠসহ খেলাধুলা করার জন্য বিশেষ ব্যবস্হা।

আরো রয়েছে অনুষ্ঠানের জন্য রান্নাঘর। সেই রান্না ঘরটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে আছে। শুধু রান্না ঘর নয়, অফিসার্স ক্লাবটির ভিতরে ওয়ালের গায়ে শ্যাওলা ধরে ফেটে চৌচির হয়েছে। ওয়ালে শ্যাওলা ছাড়াও মেঝে কাঠের পরিবর্তে রয়েছে বাঁশ দিয়ে বিভিন্ন অংশ মেরামতের। বাঁশ দিয়ে মেরামতের কারণে প্রায় সময় অনুষ্ঠানে আসা বাচ্চারা দূর্ঘনার স্বীকার হচ্ছেন।

সম্প্রতি সময়ে পৌরসভার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন এর মেয়ের বৌ-ভাতের অনুষ্ঠানের জন্য রেলওয়ে অফিসার্স ক্লাবটি ১২ঘন্টার জন্য ৩০০০ (তিন হাজার) টাকায় ভাড়া দেন রেলওয়ে কতৃপক্ষ। সেই অনুষ্ঠান চলা সময়ে বাঁশের মেরামত করা জায়গায় দূর্ঘটনার স্বীকার হন বর পক্ষের আসা একটি বাচ্চা, পরে তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করে বাসায় নেয়া হয়। এভাবে একের পর এক দূর্ঘটনা ঘটছে ক্লাবটিতে। সংস্করণ ও পরিচর্যার অভাবে অফিসার্স ক্লাবটি বর্তমানে ভূতরে পরিনত হয়েছে।

রেলওয়ের সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সরকার নির্ধারীত বেতন-ভাতা দিয়ে কর্মচারি রেখেছে। লালমনিরহাট রেল বিভাগের আলোচিত হোসেন ইনস্টিটিউটি ইতি মধ্যে অযন্তে কর্মকর্তাদের অবহেলার কারণে নষ্ট হয়ে নেশা খোরদের আড্ডায় পরিনত হয়েছে। এভাবে রেলের সরকারি সম্পদ নষ্ট ও নেশা খোরদের আড্ডা হওয়ায় দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের উদাসীনতাকে দায়ী করছেন এলাকাবাসী।

রেলওয়ে বিভাগীয় প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা যায়, লালমনিরহাটের রেলওয়ে অফিসার্স ক্লাবটির নামে নির্ধারীত কোন সরকারি বরাদ্দ আসেনা। বরাদ্দ আসে বাসা-বাড়ি-বাংলো ও অন্যান্য জিনিস মেরামতের জন্য। সেই হিসাবে অফিসার্স ক্লাবটিও তার মধ্যে পরে। কি কারণে সংস্করণ হচ্ছে না তা আমি জানি না, (ডিএন) স্যার এ ব্যাপারে ভালো বলতে পারে, এভাবে কথাগুলো বললেন বিভাগীয় প্রকৌশলী অফিসের প্রধান অফিস সহকারী ফিরোজ আহমেদ।

প্রতিটি অনুষ্ঠানে জন্য ক্লাবটির ভাড়া বাবদ ৩০০০ (তিন হাজার) টাকা নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, ওই ভাড়ার টাকা রাখার জন্য আমরা একটা একাউন্ট করেছি, সেখানে জমা রাখা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন রেলওয়ে কর্মকর্তা বলেন, সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী রেলের আয়কৃত অর্থ কোন একান্টে রাখতে পারেনা। প্রতি মাসে একাউন্স অফিসের মাধ্যমে রাজশাহীতে পাঠানো হয়। প্রতি বছর বাসা-বাড়ি-অফিস-বাংলো মেরামতের জন্য লক্ষলক্ষ টাকা বরাদ্দ আসে। সে হিসাবে অফিসার্স ক্লাবটিও পড়ে, সেটি সংস্করণ না করে বরাদ্ধকৃত অর্থ আত্নসাত করছে রেলওয়ে কতৃপক্ষ।

এবিষয়ে বিভাগীয় প্রকৌশলী আহসান হাবিব-কে একাধিকবার ফোন দিলেও ফোন ধরেনি, অফিসে দেখা করতে গেলে দেখা পাওয়া যায়নি।

লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার আব্দুস সালাম এবিষয়ে বলেন, আমি এখানে নতুন এসেছি তাই বরাদ্দ আছে কি না দেখে নেই, বরাদ্দ থাকলে সংস্করণের কাজ অবশ্যই হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মতামত লিখুন
Theme Created By ThemesDealer.Com