যশোরে অভিযানে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) চার সদস্য। তাদের মধ্যে শহিদুল ইসলাম নামে এক কনস্টেবলকে গুরুতর আহত অবস্থায় যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা— এমন অভিযোগ আনা হলেও অস্বীকার করেছে সিআইডি পুলিশ। বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় যশোরের রাজারহাট মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার বাদী হয়ে অভিযুক্ত তুষারসহ অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে দুটি মামলা করেছে পুলিশ।
সিআইডি পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে এসআই হাবিব, এসআই তরিকুল ইসলাম, এএসআই মো. জাহিদ হোসেন এবং কনস্টেবল শহিদুল ইসলাম নিয়ে গঠিত একটি দল রাজারহাট এলাকায় অভিযান চালায়। এসময় তারা ওই এলাকার মাসুদ রানার ছেলে তুষারকে নিয়ে কাশ্মীরি বিরিয়ানি হাউজের ভিতরে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে তল্লাশি করে। এক এক পর্যায়ে তার কাছ থেকে ২০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট পাওয়া গেছে দাবি করে সিআইডি।
এসময় তুষার সিআইডি সদস্যদের ‘ভুয়া পুলিশ’ বলে চিৎকার শুরু করে। এতে স্থানীয় কয়েকজন সিআইডি পুলিশদের ওপর হামলা চালায়। পরবর্তীতে যশোর কোতোয়ালি থানা পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে।
রাজারহাট এলাকার চা দোকানি মোতাহার হোসেন বলেন, ‘কাশ্মীরি বিরিয়ানি হাউজের সামনে থেকে মারামারি করতে করতে আমার দোকানের সামনে চলে আসে। যারা সিআইডি পরিচয় দেওয়াকারিরা ছিলেন সাদা পোশাকে। তারা যখন তুষারকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে, ও তখন বলছিলো, আমার টাকা মোবাইল নিয়ে চলে যাচ্ছে, ভুয়া সিআইডি পরিচয়ে। আমাকে বাাঁচও। তখন কিছুলোক উত্তেজিত হয়ে তাদের ওপর হামলা শুরু করে। এসময় সিআইডির দুজন পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ আসলে ঘটনাস্থলে স্বাভাবিক হয়।
স্থানীয় কয়েকজন জানায়, তুষারের নামে পূর্বে মাদকের কোন মামলা নেই। তবে মারামারিসহ কয়েকটি মামলা রয়েছে। সিআইডি সদস্যদের অফিশিয়াল কোন ড্রেস থাকতো তাহলে এই ধরণের কোন ঘটনা ঘটতো না।
এদিকে অভিযুক্ত তুষারের দাবি ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করায় মারামারি সূত্রপাত হয়। তাকে একটি মোবাইল ভিডিওতে বলতে শোনা যায়, হঠাৎ দুই ব্যক্তি তাকে ধরে কেয়া হোটেলের ভিতর নিয়ে যায়। এরপর পকেটে কি জানতে চাইলে তিনি পকেটে থাকা দুটি ফোন ও নগদ ৫ হাজার টাকা বের করে দেন। একপর্যায়ে ওই দুই ব্যক্তির একজন মোবাইল ও টাকা নিয়ে চলে যেতে গেলে তিনি প্রতিবাদ করেন। এসময় একজন তার হাত থাকা একটি পোটলা দেখিয়ে বলে তোর কাছে ইয়াবা পাওয়া গেছে। এসময় আমি তাকে ঘুষি মারলে স্থানীয়রাও মারপিটে অংশ নেয়।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে সিআইডি পুলিশের বিশেষ পুলিশ সুপার মোসাঃ সিদ্দিকা বেগম। তিনি বলেন, পুলিশ সদস্যরা অভিযানে গেছে। তারা কাউকে অহেতুক ফাঁসাতে যাবে কেন। তুষারের বিরুদ্ধে মামলাও আছে। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনার প্রেক্ষিতে সরকারি কাজে বাধা ও মাদক ব্যবসার অভিযোগে তুষারের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৪/৫জনের নামে মামলা হয়েছে। অভিযুক্তদের ধরতে যশোর কোতোয়ালি পুলিশ কাজ করছে।