মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা পণ্যে আগামী ১ আগস্ট থেকে ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। তিনি সতর্ক করে বলেন, যদি এই দুই বাণিজ্যিক অংশীদার যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেয়, তাহলে তিনি আরও বেশি হারে শুল্ক আরোপ করবেন।২৭ সদস্যবিশিষ্ট ইইউ এরই মধ্যে জানিয়েছে, তারা ১ আগস্টের আগে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর আশা করছে। খবর বিবিসির।
চলতি সপ্তাহেই ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, কানাডা ও ব্রাজিলের পণ্যের ওপরও নতুন করে শুল্ক আরোপ করা হবে, যা কার্যকর হবে ১ আগস্ট থেকেই। একইসঙ্গে, ছোট কিছু বাণিজ্য অংশীদার দেশকেও চিঠি পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেনকে পাঠানো চিঠিতে ট্রাম্প লেখেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে আমরা বহু বছর ধরে আলোচনা করেছি। এখন আমরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি যে, তাদের শুল্ক ও অশুল্ক নীতিমালা এবং বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা থেকে উদ্ভূত দীর্ঘমেয়াদি, বৃহৎ ও স্থায়ী বাণিজ্য ঘাটতি থেকে সরে আসতে হবে।
ইইউ ও মেক্সিকোকে পাঠানো চিঠিগুলোতে ট্রাম্প সতর্ক করেছেন, যদি তারা যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা শুল্ক আরোপ করে, তাহলে তিনি সেই ৩০ শতাংশের ওপরে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করবেন।
ট্রাম্প প্রায়শই ইইউর সমালোচনা করে থাকেন। চলতি বছরের ২ এপ্রিল তিনি ইইউসহ আরও বহু অংশীদার দেশের পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক প্রস্তাব করেন এবং বাণিজ্য আলোচনা থমকে যাওয়ার পর তা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর হুমকি দেন।
ওয়াশিংটন ও ব্রাসেলস ৯ জুলাইয়ের মধ্যে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছিল, তবে এ নিয়ে এখনো কোনো অগ্রগতির ঘোষণা আসেনি। মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ইইউর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ২৩৫.৬ বিলিয়ন ডলার (২০২ বিলিয়ন ইউরো; ১৭৪ বিলিয়ন পাউন্ড)।
ভন ডার লেন বলেছেন, ইইউ এখনো ১ আগস্টের মধ্যে চুক্তি করতে প্রস্তুত আছে। বিশ্বের খুব কম দেশই ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো খোলামেলা ও ন্যায্য বাণিজ্য চর্চা করে। আমরা ইইউর স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করব, প্রয়োজনে তুলনামূলক পাল্টা ব্যবস্থা নেব। গত মাসে কানাডায় জি৭ সম্মেলনে অন্য বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে দেখা করেন ট্রাম্প। সেখানে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ট্রাম্পের ঘোষণায় জোরালো আপত্তি জানিয়েছেন। অন্যদিকে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি এক বিবৃতিতে বলেন, আশা করি একটি ন্যায্য চুক্তি হবে। দুই পক্ষের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু করাটা কোনোভাবেই যুক্তিসঙ্গত নয়।