• রবিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১২:৪৩ পূর্বাহ্ন
  • |
  • English Version
  • |
নোটিশ:
২৪ ঘন্টায় লাইভ খবর পেতে চোখ রাখুন বিডি ২৪ ক্রাইম ওয়েবসাইটে...

বাকৃবির আবাসিক হলে ছাত্রলীগের নির্যাতনের চিত্র সংবলিত ‘টর্চার কর্নার’ প্রদর্শন

Reporter Name / ১১ Time View
Update : বুধবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০২৫

বাকৃবি প্রতিনিধি : বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) আশরাফুল হক হলের শিক্ষার্থীরা সম্প্রতি নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের দ্বারা শিক্ষার্থীদের ওপর চালানো অমানবিক নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে একটি ‘টর্চার কর্নার’ তৈরি করেন। সেখানে নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের ছবি প্রদর্শন করা হয়, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া পর্যবেক্ষণ করেন। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাতে বাকৃবির আশরাফুল হক হলে জুলাই বিপ্লব শীতকালীন টুর্নামেন্টের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের আগে সাময়িকভাবে নির্মিত ‘টর্চার কর্ণারে’ ওই প্রদর্শনী তুলে ধরা হয়।এসময় তৎকালীন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের দ্বারা শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীরা তাদের অনুভূতিও ব্যক্ত করেন।

আশরাফুল হক হলের আবাসিক ছাত্র রিফাত বিন শায়েকুজ্জামান বলেন, ২০২২ সালের ১৩ ডিসেম্বর বিকেলে ক্লাস করে হল থেকে জিনিসপত্র নিয়ে বের হচ্ছিলাম। হঠাৎ এক সিনিয়র আমাকে গেস্টরুমে নেয়ার পর আমার সাথে শুরু হয় অমানবিক নির্যাতন। একের পর এক লেভেলের ভাইরা ঢুকতেছে, কেনো আমি হল ছেড়েছি তা জিজ্ঞেস করছে আর লাথি, থাপ্পর মারতেছে। প্রথম দফা মারের পর ঠিক দুই ঘণ্টা পর সন্ধ্যা ৭ টায় আমাকে হলের তৃতীয় তলায় বিশেষ এক পলিটিকাল রুমে নিয়ে আরেক দফা মারধর করা হয়। মারধরের এক পর্যায়ে আমাকে হকি স্টিক দিয়ে পিটানো হয়, প্লাস দিয়ে আঙুল চেপে ধরা হয়। থাপ্পরের এক পর্যায়ে আমার কানের পর্দা ফেটে গিয়ে নাক মুখ দিয়ে রক্ত পড়ছিল। ওই অবস্থাতেই আমার পরিবারকে কল করতে বলা হয় এবং সামনের নির্বাচনে কাকে ভোট দিবে জিজ্ঞেস করতে বলা হয়। দীর্ঘ ৬ ঘন্টা অমানবিক নির্যাতনের পর সিদ্ধান্ত নেয়া হয় আমাকে হলে রাখা যাবে না। অজ্ঞাত কারনে অ্যাম্বুলেন্স খবর দেয়া হলেও পরে আর আনা হয়নি।

আশরাফুল হক হলের আরেক আবাসিক ছাত্র মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ওই একইদিনে আমাদের গেস্টরুমে ডাকা হলো ছাত্রদল করার অভিযোগে। ১১ তারিখ রক্ত দেয়ায় আমি অসুস্থ ছিলাম তার উপর আমার অ্যাজমার সমস্যাও রয়েছে। আমাকে হলের ২৩৪ নম্বর রুমে নিয়ে একের পর এক থাপ্পর মারা হয়। এক পর্যায়ে ছাত্রলীগ নেতা আজহার আমাকে রড দিয়ে হাঁটুতে সজোরে আঘাত করলে আমি মাটিতে পড়ে যাই। তখন শ্বাসকষ্ট শুরু হলে আমাকে একসাথে ঔষুধের দুই ডোজ খাওয়ায় এবং থাপ্পর ও রডের বাড়ি দিতে থাকে। এত কান্না পাচ্ছিল যে একজন অসুস্থ মানুষের সাথে এমন আচরণ! এরপর ওয়াশরুমে গিয়ে বমি করলাম। এক পর্যায়ে তীব্র অসুস্থ হয়ে পড়লে আমাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে নেয়া হয় এবং চিকিৎসা শেষে বললো আমি ছাত্রদল করি এমন স্বীকারোক্তি দিতে হবে। পরবর্তীতে ছাত্রদল ট্যাগ দিয়ে আমাকে হল থেকে বের করে দেয়া হয়।

আশরাফুল হক হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলম মিয়ার সভাপতিত্বে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহিদুল হক, মাৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরদার, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আলীম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হুমায়ূন কবির, এগ্রোমেটিওরোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. আহমদ খায়রুল হাসান, সহযোগী ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ প্রমুখ। এছাড়া ওই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে জুলাই আন্দোলনকে ফুটিয়ে তুলতে ‘’জুলাই বিপ্লব কর্ণার’ ও টুর্নামেন্ট উপলক্ষে ‘খেলাধুলা কর্ণার’ স্থাপন করে আশরাফুল হক হলের শিক্ষার্থীরা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category